বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ব্র্যাকের খামখেয়ালিপনায় উখিয়ায় জনদূর্ভোগ

রফিকুল ইসলাম, উখিয়া •

উখিয়ার কয়েকটি স্থানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার নামে ব্র্যাক এনজিওর বিরুদ্ধে অব্যবস্হাপনা ও অবহেলার অভিযোগ উঠেছে। মাসের পর মাস বিষাক্ত বর্জ্যের স্তূপ জন চলাচলের রাস্তার পাশে পড়ে থেকে দূষণ ছড়ালেও এনজিওটি কোন ব্যবস্হা না নেয়ার জন অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলা সদরের উখিয়া প্রেস ক্লাব সংলগ্ন পরিত্যক্ত জায়গাটি বিষাক্ত ময়লা আর্বজনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে কয়েকমাস ধরে।

উখিয়া বাজারের মাছ,মুরগী, কাঁচা তরিতরকারি, চা দোকান, পান দোকানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্টানের প্রতিদিনকার ময়লা,আর্বজনার বর্জ্য রাতের অন্ধকারে এ স্থানে ফেলা হয়। মাছ,মুরগীর নাড়িভুড়ি,কাঁচা সবজির বর্জ্য ও রেষ্টুরেন্টের পঁচা গলা পলিথিন ও ব্যাগ ভর্তি করে এখান ও ফরেস্ট রোডের পাশে ফেলা হয়ে থাকে।

বিশেষ করে উখিয়া প্রেস ক্লাব ও কক্সবাজার সড়কের পাশে এসব বিষাক্ত স্তুপীকৃত বর্জ্য মাসের পর মাস ধরে ধরে দূষিত করে জন ও যানবাহন চলাচলে মানুষদের চরম অস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতি পার হতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এসব দূষিত ময়লা স্তুপের পাশেই রয়েছে সাব রেজিস্ট্রার, যুব উন্নয়ন, মহিলা ও শিশু বিষয়ক, আনসার ভিডিপিসহ একাধিক সরকারি অফিস,কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও একাধিকবার বহুতল আবাসিক ভবন, এনজিও অফিস।

ব্যাপকহারে রোহিঙ্গা আশ্রয়ের পূর্বে এখানে এধরনের যত্রতত্র ময়লা আর্বজনার ভাগাড় ছিল না বলে জানান সুজন সভাপতি সাংবাদিক নুর মোহাম্মদ সিকদার। রোহিঙ্গা উপলক্ষে সারাদেশ থেকে বিভিন্ন উপায়ে উখিয়ায় কয়েক হাজার বহিরাগত লোককে এখানে আবাসিক হয়ে থাকতে হচ্ছে। এছাড়াও স্হানীয়ভাবে বিভিন্ন এলাকা থেকে উপজেলা সদরে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকছে অনেকে।

উখিয়া প্রেসক্লাব সহ সভাপতি হুমায়ুন কবির জুশান বলেন,স্বভাবতই অতিরিক্ত লোকজনের নিত্য ব্যবহার্য বর্জ্যের পরিমাণও বাড়ছে। কিন্তু জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ নিয়ে দেখার মত হয়ত কেউ নেই। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের অনেক বলা হয়েছে কিন্তু কোন কার্যকর ব্যবস্হা চোখে পড়ছে না।বরং দিনের পর দিন জনদূর্ভোগ বেড়ে চলছে।

সাংবাদিক আবদুল লতিফ বাচ্চু জানান, রোহিঙ্গা সংক্রান্ত মোট বরাদ্দের এক চতুর্থাংশ স্হানীয় ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের উন্নয়নে ব্যয় করার সরকারি নির্দেশনা রয়েছে। সেই অর্থ দিয়ে ব্রাক এনজিও উখিয়া সদরে, পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালী ও থাইংখালীতে বর্জ্য ব্যবস্হাপনার দায়িত্ব নেয় গত প্রায় এক বছর ধরে। কিন্তু ব্রাক তাদের দায়িত্ব পালনে এমন গাফেলতি ও কারচুপি করে যাচ্ছে যা বলার অপেক্ষা রাখে না।

উখিয়া সদর,বালুখালী ও থাইংখালীতে যত্রতত্র দিনের পর দিন, মাসের পর মাস ময়লা আর্বজনা পড়ে থাকলেও ব্রাক তা সরানোর গরজবোধ করছে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্হানীয় লোকজন।

থাইংখালী বাজারের ব্যবসায়ী আবদুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন জানান, ব্রাক যেখানে কাজ করে সেখানে দায়িত্বহীনতা ও ফাঁকিবাজি করে থাকে।

তারা জানান,পাশ্ববর্তী পালংখালী বাজার ও সংলগ্ন এলাকাগুলোতে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট ও সুইস রেড ক্রস এর বর্জ্য ব্যবস্হাপনা প্রশংসনীয় ও অনুকরণীয়। তাদের মতে,এসব কাজ এনজিওর পাশাপাশি সরকারি সংশ্লিষ্ট কোন কর্তৃপক্ষকে তদারকি করা প্রয়োজন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ব্রাকের নানা অনিয়মের কারণে দাতা সংস্থা ইউএনডিপি ব্রাক হতে প্রকল্পটি প্রত্যাহার করে নিয়েছে। রোহিঙ্গাদের জরুরী সাড়াদান কর্মসূচীর ব্রাক ম্যানেজার মোঃ ফারহান বলেন, মে মাস থেকে এসব বর্জ্য ব্যবস্হাপনা কার্যক্রম ব্রাক আর করছে না। ইউএনডিপি হয়ত প্রকল্পটি অন্য কোন এনজিওকে দিয়ে পরিচালনা করবে বলে তিনি জানান।